ত্রিশালে সড়কে শিশুর জন্ম ক্ষতিপূরণের ৫ লাখ টাকার বিষয়ে জানাতে ডিসিকে নির্দেশ

ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর মৃত্যুর আগ মুহূর্তে সড়কে জন্ম নেওয়া শিশুর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণের পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে কি না, তা জানাতে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসককে (ডিসি) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১০ জানুয়ারি দিন ঠিক করেছেন আদালত।

 

আজ (২৭ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে এদিন এ বিষয়ে করা রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসাইন। তিনি নিজেই আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

 

গত ৭ আগস্ট শিশুটির কল্যাণে পরিবারকে প্রাথমিকভাবে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে আরও এক মাস সময় পেয়েছিল সংশ্লিষ্ট ট্রাস্টি বোর্ড। এরপর শিশুর একাউন্ট নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় আজ ওই রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট এ আদেশ দেন।

 

এর আগে গত ১৯ জুলাই শিশুর চিকিৎসা ও কল্যাণে তার পরিবারকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রাথমিকভাবে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি শিশুটিকে দেখভালের জন্য সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে একটি কমিটি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে কমিটিকে শিশুটির সার্বিক বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেন আদালত।

 

সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর অধীনে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের দাবি নিষ্পত্তির জন্য গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডকে তাৎক্ষণিকভাবে এ অর্থ দিতে বলা হয়।

একই সঙ্গে শিশুটির ভরণপোষণ ও তার পরিবারকে কেন পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।

 

নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়, সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিআরটিএ চেয়ারম্যান, সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের দাবি নিষ্পত্তির জন্য গঠিত ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়ারম্যান, দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ওই ট্রাকের মালিককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

 

গত ১৬ জুলাই ত্রিশাল পৌর শহরের খান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ওই দুর্ঘটনায় ত্রিশালের রাইমনি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৪০), তার স্ত্রী রত্না বেগম (৩০) এবং মেয়ে সানজিদা খাতুন (৬) মারা যায়। মৃত্যুর আগে রত্না বেগম সড়কেই এক নবজাতকের জন্ম দেন।

জাহাঙ্গীর আলম অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে ত্রিশালে এসেছিলেন, সঙ্গে তাদের মেয়ে সানজিদাও ছিল।

 

ওই ঘটনায় জাহাঙ্গীরের বাবা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু ১৭ জুলাই ত্রিশাল থানায় একটি মামলা করেন। প্রথমে তিনি রত্নার রেখে যাওয়া নবজাতকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। একটি বেসরকারি হাসপাতালে কয়েক দিন চিকিৎসা দেওয়ার পর গত ১৯ জুলাই শিশুটিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এরপর গত ২৯ জুলাই শিশুটির দাদা বাবুল ও অন্য স্বজনরা রাজধানীর আজিমপুরে শিশুদের পুনর্বাসন কেন্দ্র ছোটমণি নিবাসে রেখে যান মেয়েটিকে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সমন্বয়কদের ওপর হামলা হালকাভাবে দেখছে না সরকার

» মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে ভেতরের শকুন, বাইরেরগুলো ওত পেতে রয়েছে: মির্জা আব্বাস

» ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা-ভূমিধসে নিহত ২৭

» বর্তমান পরিস্থিতির সমাধানে সব দলের সঙ্গে বসবে সরকার : মাহফুজ আলম

» সবাইকে নিয়ে নতুন বাংলাদেশ তৈরি করবে বিএনপি : তারেক রহমান

» প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জাতীয় ঐক্যের কথা বলল জামায়াত

» প্রতিদিন নগদে যুক্ত হচ্ছেন ২০ হাজার গ্রাহক

» ব্র্যাক ব্যাংকের অ্যানুয়াল রিস্ক কনফারেন্সে ঝুঁকি মোকাবেলায় পূর্বপ্রস্তুতির ওপর গুরুত্বারোপ

» গুজবে কান না দিয়ে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে, নওগাঁর ডিসি

» ইসকন নিষিদ্ধের দাবীতে ইসলামপুরে ইসলামী ছাত্র শিবিরের বিক্ষোভ মিছিল

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ত্রিশালে সড়কে শিশুর জন্ম ক্ষতিপূরণের ৫ লাখ টাকার বিষয়ে জানাতে ডিসিকে নির্দেশ

ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর মৃত্যুর আগ মুহূর্তে সড়কে জন্ম নেওয়া শিশুর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণের পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে কি না, তা জানাতে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসককে (ডিসি) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১০ জানুয়ারি দিন ঠিক করেছেন আদালত।

 

আজ (২৭ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে এদিন এ বিষয়ে করা রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসাইন। তিনি নিজেই আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

 

গত ৭ আগস্ট শিশুটির কল্যাণে পরিবারকে প্রাথমিকভাবে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে আরও এক মাস সময় পেয়েছিল সংশ্লিষ্ট ট্রাস্টি বোর্ড। এরপর শিশুর একাউন্ট নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় আজ ওই রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট এ আদেশ দেন।

 

এর আগে গত ১৯ জুলাই শিশুর চিকিৎসা ও কল্যাণে তার পরিবারকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রাথমিকভাবে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি শিশুটিকে দেখভালের জন্য সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে একটি কমিটি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে কমিটিকে শিশুটির সার্বিক বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেন আদালত।

 

সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর অধীনে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের দাবি নিষ্পত্তির জন্য গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডকে তাৎক্ষণিকভাবে এ অর্থ দিতে বলা হয়।

একই সঙ্গে শিশুটির ভরণপোষণ ও তার পরিবারকে কেন পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।

 

নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়, সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিআরটিএ চেয়ারম্যান, সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণের দাবি নিষ্পত্তির জন্য গঠিত ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়ারম্যান, দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ওই ট্রাকের মালিককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

 

গত ১৬ জুলাই ত্রিশাল পৌর শহরের খান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ওই দুর্ঘটনায় ত্রিশালের রাইমনি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৪০), তার স্ত্রী রত্না বেগম (৩০) এবং মেয়ে সানজিদা খাতুন (৬) মারা যায়। মৃত্যুর আগে রত্না বেগম সড়কেই এক নবজাতকের জন্ম দেন।

জাহাঙ্গীর আলম অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে ত্রিশালে এসেছিলেন, সঙ্গে তাদের মেয়ে সানজিদাও ছিল।

 

ওই ঘটনায় জাহাঙ্গীরের বাবা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু ১৭ জুলাই ত্রিশাল থানায় একটি মামলা করেন। প্রথমে তিনি রত্নার রেখে যাওয়া নবজাতকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। একটি বেসরকারি হাসপাতালে কয়েক দিন চিকিৎসা দেওয়ার পর গত ১৯ জুলাই শিশুটিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এরপর গত ২৯ জুলাই শিশুটির দাদা বাবুল ও অন্য স্বজনরা রাজধানীর আজিমপুরে শিশুদের পুনর্বাসন কেন্দ্র ছোটমণি নিবাসে রেখে যান মেয়েটিকে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com